'অপভ্রংশ' কথাটির অর্থ কি?
অপভ্রংশ বলতে মধ্য ইন্দো-আর্য ভাষার (তথা প্রাকৃত ও পালি ভাষার) পরবর্তী ঐতিহাসিক ধাপকে বোঝায়। সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ পতঞ্জলির মহাভাষ্য গ্রন্থে সর্বপ্রথম "অপভ্রংশ" শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত কিছু অশিষ্ট শব্দকে নির্দেশ করার জন্য শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।
Related Questions
- প্রাকৃত বা প্রাকৃত ভাষা কথাটির তাৎপর্য হলো প্রকৃতির অর্থাৎ জনগণের কথ্য ও বোধ্য ভাষা।
- এক পর্যায়ে এ প্রাকৃত ভাষাই ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক প্রভাবে, কথ্য ভাষার উচ্চারণের বিভিন্নতা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন রূপ পরিগ্রহ করে।
- এ প্রাকৃত ভাষাই আঞ্চলিক বিভিন্নতা নিয়ে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত হয়। যেমন - মাগধি প্রাকৃত, মহারাষ্ট্রি প্রাকৃত, শৌরসেনি প্রাকৃত ইত্যাদি।
- মাগধি প্রাকৃতের অপভ্রংশ থেকেই কালক্রমে বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে উৎপত্তি লাভ করে বাংলা ভাষা।
প্রাকৃত অর্থ স্বাভাবিক, প্রাকৃত ভাষার নামকরণ প্রসঙ্গে কেউ কেউ বলেন যে, এর প্রকৃতি বা মূল হচ্ছে 'সংস্কৃত', তাই প্রকৃতি থেকে উদ্ভূত বলে এর নাম হয়েছে প্রাকৃত। আবার কেউ কেউ বলেন, 'প্রকৃতি' অর্থ সাধারণ জনগণ এবং তাদের ব্যবহূত ভাষাই প্রাকৃত ভাষা, অর্থাৎ প্রাকৃত জনের ভাষা প্রাকৃত ভাষা।
মাগধী প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার উত্তপত্তি ঘটেছে এ মতবাদ দিয়েছেন স্যার জর্জ গ্রিয়ার্সন। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এ মত সমর্থন করেছেন। কিন্তু ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ভিন্ন মত পোষণ করে বলেন- গৌড়ীয় প্রাকৃত হতে বাংলা ভাষার উদ্ভব।
বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে একথায়-
ইন্দো ইউরোপীয় → শতম → ইন্দো আর্য → ভারতীয় → প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা → প্রাচীন কথ্য ভারতীয় আর্যভাষা → গৌড়ী প্রাকৃত → গৌড় অপভ্রংশ → বঙ্গ কামরূপী → বাংলা ও অসমীয়।
বৈদিক ভাষা ভারতে আগত আর্য জাতির আদি ভাষা। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের দিকে আর্যরা ভারতবর্ষে আসা শুরু করেছিল। উত্তর - পশ্চিম ভারত দিয়ে এই আগত এই জনগোষ্ঠী খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ অব্দের দিকে বঙ্গদেশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। খ্রিষ্ট - পূর্ব ১০০০ বৎসরের ভিতরে ভারতীয় ইন্দো - ইরানিয়ান ভাষার পরিবর্তন ঘটে।
জব সলুশন