বাংলা গদ্যের প্রথম যুগে কোন রীতির প্রচলন ছিল?
বাংলা গদ্যের প্রথম দিকে 'সাধুরীতি' রীতির প্রচলন ছিল। সাধুরীতি বলতে এখানে উদ্দেশ্য হল যে, পুরনো এবং নিখুঁত ভাষায় লেখা হয় যা সাধারণ মানুষের জন্য সহজ নয়। এটি অধিকাংশ সময় শাস্ত্রীয় এবং প্রথাগত লেখায় ব্যবহৃত হত।
যখন বাংলা গদ্যর প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, 'সাধুরীতি' ছিল সেই সময়কার একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি, যেটি সাহিত্য রচনায় প্রভাব ফেলেছিল।
Related Questions
সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা কে " চলিত ভাষা " বলা হয় । চলিত ভাষার আদর্শরুপে গৃহীত ভাষাকে বলা হয় প্রতিম ভাষা । চলিত ভাষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য প্রমিত উচ্চারণ । কলকাতা অঞ্চলের মৌখিক ভাষাকে ভিত্তি করে চলিত ভাষা গড়ে উঠেছে । উনিশ শতকের তৃতীয় দশকে ভাবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যয়ের হাতে চলিত রীতির প্রথম ব্যবহার হয় । তারপর প্যারীচাঁদ মিত্র ও কালী প্রসন্ন সিংহের রচনায় এর ক্রমবিকাশ ঘটে
বাংলা ভাষার প্রমিত রূপকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে একটি সাধু ভাষা, অন্যটি চলিত ভাষা।
সাধু ভাষা সংস্কৃত বা তৎসম শব্দবহুল। চলিত ভাষা তদ্ভব এবং দেশী-বিদেশী শব্দবহুল। প্রমিত বা লেখ্য বাংলার আবার দুটি রূপ- সাধু ও চলিত। সাধু ভাষা অনেক ক্ষেত্রে সন্ধি ও সমাসবদ্ধ পদে আড়ষ্ট। এর ক্রিয়াপদ দীর্ঘ।
অপরপক্ষে, চলিত ভাষার গতি স্বচ্ছন্দ। এর ক্রিয়াপদ সংক্ষিপ্ত। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন গদ্যরীতি সাধু ভাষায় গড়ে উঠেছে। কারণ বাংলা গদ্য সৃষ্টির প্রাথমিক পর্বে সংস্কৃতজ্ঞ পন্ডিতেরা সাহিত্য সৃষ্টির দায়িত্বে ছিলেন। রাজা রামমোহন রায়, মৃত্যুঞ্জয় তর্কালংকার, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাগর প্রভৃতি প-িতদের হাতে সাধু রীতিতে বাংলা গদ্যের সূত্রপাত।
তাই, সার্বজনীন লিখিতরূপ হিসেবে সাধু ভাষা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।
জব সলুশন